রাণীশনকৈল থানা থেকে বিছিন্ন হয়ে জন্ম নেয়া হরিপুর থানা প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট মন্ডিত। মাত্র ৭৬ বর্গ মাইল আয়তন বিশিষ্ট উপজেলাটি পূর্বে ও পশ্চিমে দুই উপনদী কুলিক ও নাগরের মেখলা বেষ্টিত এবং উচু বেলে দো-আশ মাটি।বন্যরেখা বর্হিভূত জেলা মৃত্তিকা স্তরে বিভক্ত। পৌরণিক হরিপুর ছিল অরণ্যক আর অপেক্ষাকৃত অনুর্বর, এর জনগোষ্ঠী ছিল আয়েশী, শ্রম বিমুখ উদ্দেগহীন।
ভূতাত্তিক উৎপত্তি ও গুণাগুণের নিরীখে তিস্তার পল্লী অঞ্চল হিসেবে পরিগণিত হলেও বিহারের শুষ্ক মরু অঞ্চলের সঙ্গে এর ভূ-প্রাকৃতিক সাদৃশ্য চমকপ্রদ। হরিপুরের মাটি অধিকাংশ স্থানেই বেলে এবং দো-আশ। আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ। বনাঞ্চল নেই বলে বৃষ্টিপাত স্বল্প। এ অঞ্চলটি খোলড়া পরগনার অন্তর্গত ছিল। এ অঞ্চলের নামকরণ হিসেবে লোকশ্রত আছে। তা নিম্নরুপ- পরগণা খোলড়ার জামুন নামে নাশকী জমিদার ছিলেন মেহেরুন নেশা। তার বিধবা ও অপুত্রক ছিলেন। পাশ্ববর্তী ভৈষা গ্রামের তিলি হিন্দু হরিমোহন ছিলেন তার নায়েব। জমিদার কাজে এই নায়েব ছিল তার বিশ্বস্ত ব্যাক্তি। খাজান্তি থানায় খাজনা নিতে গিয়ে তিনি নিজেই জমিদার হয়ে গেছেন এবং জীবনপুর মৌজার জঙ্গলের মধ্যে আত্নগোপন করেন। বহু সন্ধানের পর জমিদার মেহের-নেষা তাকে তার নতুন আস্তানা আবিষ্কার করেন অভিষাপ দেন যে তিনি নিবংশ থাকবেন। এ জঙ্গলী আস্তানায় নাকি আজকের দক্ষিণ দালান স্টেটের জমিদার সাহেবের বসত-বাটি। সত্য বটে, এই বংশের ধারা বজায় রেখেছে দত্তক পুত্ররাই। অতপর হরিমোহন, হরিপুরের নামকরণ দিয়ে এখানেই প্রতিষ্ঠা করেন জমিদার কাচারী। ১৯১০ সালে হরিপুর কাচারী পরিণত হয় থানায় এবং ১৯৮৩ সালে উক্ত থানা উপজেলায় পরিণত হয়।